‘পারিবারিক ব্যবসা প্রসারে দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন’
প্রকাশিত : ১৮:০১, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ২০:১৭, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
বাংলাদেশের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো গত এক বছরে বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় অনেক বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আগামীতেও প্রবৃদ্ধির এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন রহিম আফরোজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ রহিম। সম্প্রতি একুশে টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাতকার নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান।
একুশে টিভি অনলাইন: পারিবারিক ব্যবসা প্রসার ও প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য অর্জনে বেশকিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এরমধ্যে আপনার প্রতিষ্ঠান কিভাবে এতো ভালো করছে ?
নিয়াজ রহিম: আসলে পাবিবারিক ব্যবসা প্রসারে পরিবারের সবার প্রচেষ্টা প্রয়োজন হয়। সবাইকে অনেক আন্তরিক থাকতে হয়। আমরা মুনাফা অর্জনের কথা চিন্তা করি না। পণ্যের মানের কথা চিন্তা করি। ব্যবসা প্রসারে পারিবারিক মূল্যবোধ প্রয়োজন হয়। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করতে গিয়ে সবার মধ্যে এক বন্ধন তৈরি হয়। একই রকম মন মসকিতার সৃষ্টি হয়। তবে যখন পরিবারের একজন সদস্যের এই মূল্যবোধের পরিবর্তন হয় তখন ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হয়। পারিবারিক ব্যবসা প্রসারে দক্ষশক্তি নিশ্চিত করতে হবে। পারিবারিক ব্যবসা ভালো করতে হলে নৈতিক মূল্যবোধে ওপর জোর দিতে হবে।
এছাড়া পারিবারিক জীবনের ব্যাপারে অত্যন্ত যত্নশীল হওয়া জরুরি। পরিবারের সদস্য ও কোম্পানির কর্মীরা যেন কাজে যত্নবান ও দক্ষ হন এবং পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটাতে পারেন, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে।
একুশে টিভি অনলাইন: আমাদের দেশে দক্ষ জনশক্তির খুব অভাব রয়েছে। এটি বৃদ্ধিতে সরকার কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
নিয়াজ রহিম: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা সনদ নির্ভর না হওয়া উচিত। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ শিক্ষার্থীকে দক্ষতা দেয় না। ব্যবসা করার জন্য কী প্রয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই বা কতটুকু জানে। আমাদের বর্তমান ব্যবসার সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থার অনেক দূরত্ব রয়েছে। আমাদের চাহিদা এক রকম আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পড়াশুনা করায় আরেক রকম। তাই শিক্ষাব্যবস্থা কর্মমূখী ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সমন্বয় করতে হবে।
একুশে টিভি অনলাইন: দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে আমাদের করণীয় কি?
নিয়াজ রহিম: আমরা যখন ব্যবসা শুরু করি তখন এমন তথ্য-প্রযুক্তি ছিলো না। এখন প্রযুক্তির প্রসার বাড়ছে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসার পরিবেশও তৈরি হচ্ছে। তাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাব্যবস্থা সেই ভাবে তৈরি করতে হবে। ব্যবসামুখী শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সবার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
প্রসঙ্গত নিয়াজ রহিমের জন্ম ১৯৫৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। তার বাবা আব্দুর রহিম এ বছরই ব্যবসা শুরু করেছিলেন। ১৯৫৮ সালে তাঁর কোম্পানি রহিম আফরোজ এক ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীকে নিয়ে ব্যাটারির পরিবেশক হিসেবে এই খাতে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে বাবার মৃত্যুর পর কানাডা থেকে শিক্ষা জীবন শেষ করে তিনি ব্যবসার হাল ধরেন। আর ১৯৯০ সালের মধ্যে তাঁরা ব্যাটারির উৎপাদন ব্যবসা নিজের হাতে নিয়ে আসেন। ধীরে ধীরে এই খাতের নেতৃত্বের আসনে বসেন তাঁরা। তারা তিন ভাই আফরোজ রহিম, ফিরোজ রহিম ও নিয়াজ রহিম।
রহিম আফরোজ আজ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান। একবিংশ শতকের প্রথম ভাগে রহিম আফরোজ গ্রুপ বাংলাদেশের প্রথম সুপার মার্কেট চেইন শুরু করে। এখানেই শেষ নয়, রহিম আফরোজ আরও কিছু নতুন ব্যবসা শুরু করে; যেমন গাড়ির যন্ত্রাংশ উৎপাদন, গাড়ি বিক্রয়, জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি।
টিআর/এসি
আরও পড়ুন